ভাষার বিবর্তন: আঞ্চলিক উপভাষা থেকে প্রমিত সামাজিক আলোচনা
Description
সংক্ষিপ্তসারঃ ভাষা কি, কাকে বলে? ভাষা কিভাবে সৃষ্টি হল? একটি ভাষা প্রথমে কিভাবে গড়ে উঠল। তারপর ভাষাগোষ্ঠীর এলাকা বৃদ্ধির ফলে একটি অঞ্চলের ভাষা কিভাবে তার আঞ্চলিকতার গণ্ডী পেরিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ভাষা হয়ে উঠল-যাকে আমরা 'ভাষা' বলি। এখন তার পরিচয় দিয়েছি। আবার সেই আঞ্চলিক ভাষার বৃহৎগোষ্ঠীর ভাষা হয়ে ওঠার পর, তা কেমন করে শিক্ষিত জনের মার্জিত উচ্চারণের ফলে শিষ্ট ভাষার জন্ম দিল। এই ভাষা, শিষ্টভাষা ও আঞ্চলিক ভাষার পারস্পরিক সম্পর্ক ও পার্থক্য নির্ণয়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাষা কিভাবে গোষ্ঠী জীবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ লোকভাষার জন্ম দিল তার পরিচয় দিয়েছি। আবার এই ভাষাই সামাজিক ভাষা হিসেবে কিভাবে সমাজ ভাষা বিজ্ঞানে পরিচয় হয়ে উঠছে তারও বর্ণনা দিয়েছি। সূচকঃ তাই ভাষা ও লোকভাষার প্রাথমিক স্তরের আলোচনা হিসেবে এই গদ্য একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হয়ে উঠেছে। আদিম মানুষের ডাকে সংকেত বিনিময়ের প্রাগভাষা থেকেই একদিন ভাষার সৃষ্টি হয়েছিল, এরকম একটি অনুমান করা যেতে পারে। যদিও সে ভাষা ছিল সীমাবদ্ধ। আর সেই বদ্ধ পূর্বভাষা থেকেই একদিন মুক্ত, অনন্ত সম্ভাবনাময় উৎপাদনী শক্তির ভাষা সৃষ্টিই মানুষের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ কীর্তি। ভাষা হল মানুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মননের শ্রেষ্ঠ পরিচয়। বিখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী স্টার্টেভান্ট (Sturtevant Edgar H) ভাষার সংজ্ঞায় লিখেছেন- 'A language is a system of arbitrary vocal symbols by which members of a social group co-operate and interract........একটি উপভাষাই ভাষা (স্বীকৃত ভাষা) হয়ে উঠতে পারে। আবার ভাষা থেকেও উপভাষার জন্ম হয়। অর্থাৎ ভাষা-উপভাষার সম্পর্ক অনেকটাই ডিম আগে না মুরগী আগে এই বিতর্কের মতো। কিন্তু উপভাষা থেকে লোকভাষার জন্ম হয় না। একই লোকভাষা বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থাৎ অঞ্চল ভেদে প্রায় একই। যেমন মেদিনীপুরের বা বাঁকুড়ার কুমোর, বা বীরভূমের কুমোর কি কোচ বিহারের, এদের মধ্যে আঞ্চলিক ভাষার ভাষিক পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু লোকভাষার অথবা তার গোষ্ঠী বা বৃত্তিগত ভাষা ব্যবহারের প্রায় কোনো পার্থক্য নেই। উপভাষার একাধিক উপাদানের মধ্যে লোকগোষ্ঠীরা ও অন্তর্ভুক্ত। তবুউপভাষার (১) যে আঞ্চলিক গণ্ডীবদ্ধতা আছে, (২) তার যে নিজস্ব ভাষিকরূপ নিভাষা Idiolect আছে, (৩) উপভাষার আদর্শ, স্বয়ম্ভরতা, ঐতিহাসিকতা ও সজীব চলমানতা এ সব লোকভাষার নেই। এই জায়গায় লোকভাষা অনেকখানি বদ্ধ। সে জন্যই উত্তরাধুনিকতার প্রভাবে তার মৃত্যুও ক্ষয় অনিবার্য। তাই তাকে সংরক্ষণ আজ আসু প্রয়োজনীয়।
Files
Steps to reproduce
সংক্ষিপ্তসারঃ ভাষা কি, কাকে বলে? ভাষা কিভাবে সৃষ্টি হল? একটি ভাষা প্রথমে কিভাবে গড়ে উঠল। তারপর ভাষাগোষ্ঠীর এলাকা বৃদ্ধির ফলে একটি অঞ্চলের ভাষা কিভাবে তার আঞ্চলিকতার গণ্ডী পেরিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ভাষা হয়ে উঠল-যাকে আমরা 'ভাষা' বলি। এখন তার পরিচয় দিয়েছি। আবার সেই আঞ্চলিক ভাষার বৃহৎগোষ্ঠীর ভাষা হয়ে ওঠার পর, তা কেমন করে শিক্ষিত জনের মার্জিত উচ্চারণের ফলে শিষ্ট ভাষার জন্ম দিল। এই ভাষা, শিষ্টভাষা ও আঞ্চলিক ভাষার পারস্পরিক সম্পর্ক ও পার্থক্য নির্ণয়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাষা কিভাবে গোষ্ঠী জীবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ লোকভাষার জন্ম দিল তার পরিচয় দিয়েছি। আবার এই ভাষাই সামাজিক ভাষা হিসেবে কিভাবে সমাজ ভাষা বিজ্ঞানে পরিচয় হয়ে উঠছে তারও বর্ণনা দিয়েছি। সূচকঃ তাই ভাষা ও লোকভাষার প্রাথমিক স্তরের আলোচনা হিসেবে এই গদ্য একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হয়ে উঠেছে। আদিম মানুষের ডাকে সংকেত বিনিময়ের প্রাগভাষা থেকেই একদিন ভাষার সৃষ্টি হয়েছিল, এরকম একটি অনুমান করা যেতে পারে। যদিও সে ভাষা ছিল সীমাবদ্ধ। আর সেই বদ্ধ পূর্বভাষা থেকেই একদিন মুক্ত, অনন্ত সম্ভাবনাময় উৎপাদনী শক্তির ভাষা সৃষ্টিই মানুষের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ কীর্তি। ভাষা হল মানুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মননের শ্রেষ্ঠ পরিচয়। বিখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী স্টার্টেভান্ট (Sturtevant Edgar H) ভাষার সংজ্ঞায় লিখেছেন- 'A language is a system of arbitrary vocal symbols by which members of a social group co-operate and interract. ....একটি উপভাষাই ভাষা (স্বীকৃত ভাষা) হয়ে উঠতে পারে। আবার ভাষা থেকেও উপভাষার জন্ম হয়। অর্থাৎ ভাষা-উপভাষার সম্পর্ক অনেকটাই ডিম আগে না মুরগী আগে এই বিতর্কের মতো। কিন্তু উপভাষা থেকে লোকভাষার জন্ম হয় না। একই লোকভাষা বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থাৎ অঞ্চল ভেদে প্রায় একই। যেমন মেদিনীপুরের বা বাঁকুড়ার কুমোর, বা বীরভূমের কুমোর কি কোচ বিহারের, এদের মধ্যে আঞ্চলিক ভাষার ভাষিক পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু লোকভাষার অথবা তার গোষ্ঠী বা বৃত্তিগত ভাষা ব্যবহারের প্রায় কোনো পার্থক্য নেই। উপভাষার একাধিক উপাদানের মধ্যে লোকগোষ্ঠীরা ও অন্তর্ভুক্ত। তবুউপভাষার (১) যে আঞ্চলিক গণ্ডীবদ্ধতা আছে, (২) তার যে নিজস্ব ভাষিকরূপ নিভাষা Idiolect আছে, (৩) উপভাষার আদর্শ, স্বয়ম্ভরতা, ঐতিহাসিকতা ও সজীব চলমানতা এ সব লোকভাষার নেই। এই জায়গায় লোকভাষা অনেকখানি বদ্ধ। সে জন্যই উত্তরাধুনিকতার প্রভাবে তার মৃত্যুও ক্ষয় অনিবার্য। তাই তাকে সংরক্ষণ আজ আসু প্রয়োজনীয়।